, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


‘মা নেই, আব্বু জেলে, আমাদের ৪ ভাই-বোনকে দেখবে কে’

  • আপলোড সময় : ১৪-১১-২০২৪ ১০:৪৪:০৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-১১-২০২৪ ১০:৪৪:০৭ পূর্বাহ্ন
‘মা নেই, আব্বু জেলে, আমাদের ৪ ভাই-বোনকে দেখবে কে’
‘মা মারা গেছে, আব্বুকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আমরা কার কাছে থাকব? কে আমাদের দেখাশোনা করবে?’ বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে নিজেদের দুঃখের কথা বলছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের চিত্রাপাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার ১৩ বছরের ছেলে সাজ্জাদ মিয়া। ছয় বছর বয়সী বোন আফসানা আক্তার, এক মাস বয়সী যমজ বোন আনিশা ও তানিশাকে নিয়ে এখন দিশেহারা শিশুটি।

জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর যমজ সন্তান জন্মের এক সপ্তাহ পর মারা যান সাজ্জাদের মা সাথী বেগম। মায়ের মৃত্যুর পর তাদের বাবা জামাল মিয়া তার ৪ সন্তান ও বৃদ্ধ মাকে দেখাশোনা করতেন। তবে গত ৯ নভেম্বর গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় দিনমজুর জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠায় পুলিশ। এরপর মা হারা শিশু সাজ্জাদদের আশ্রয় এখন অশীতিপর অসুস্থ দাদি গোলজান বেগমের কাছে।

তবে শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের ভারে নিজেই ভালোভাবে চলতে পারেন না গোলজান বেগম। ফলে তিন বোনদের নিয়ে দিশাহারা সাজ্জাদ। অভিভাবক না থাকায় পড়ালেখাও বন্ধ হতে চলেছে স্থানীয় এম এম খান উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া সাজ্জাদ ও ৪৭ নম্বর চিত্রাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী আফসানা আক্তারের।

এদিকে শিশু সাজ্জাদ মিয়া বলে, ‘কয়েক দিন পরেই আমার বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। আমার স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি কে দেবে? আমার এক মাস বয়সী দুই বোনের দুধের টাকা কে দেবে? বাড়ির আশপাশের লোকজন আমাদের খাবার দিচ্ছে, এভাবে কত দিন চলবে? আমি আমার বাবাকে ফেরত চাই।’

সাজ্জাদের নানি শাহিনুর বেগম বলেন, মাস খানেক আগে আমার মেয়ে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ছয় দিন পর মারা যায়। মেয়ে মারা যাওয়ার পর আমার জামাতা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। চার ছেলে-মেয়ে ও তার মাকে দেখাশোনা করত। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। কী অপরাধ করেছিল আমার জামাতা? সে দিনমজুরের কাজ করত। এ দেশে কোটি কোটি টাকা যারা লুটে খেয়েছে, তারা তো দিব্যি ভালো আছে। অবুঝ চারটি বাচ্চা নিয়ে কী করব আমরা? আল্লাহ এই মাসুম বাচ্চাদের কপালে এত কষ্ট দিয়ে পাঠাল?

সাজ্জাদের চাচা মনির মিয়া বলেন, আমার ভাই বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নেই। একসময় সে আমতলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিল। পুলিশ কী কারণে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। এখন জামালের চার শিশুসন্তানকে দেখাশোনা করার কেউ নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমি আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই।

এদিকে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ঢাকার তেজগাঁও থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বলে আমরা জেনেছি।
দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস

দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস